অর্থ আইন, ২০২১ এর মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করা ও শেয়ার বাজার বান্ধব বিনিয়োগেরর সুযোগ!
Publcihed by Admin 2 years ago
দেশের শেয়ার বাজারের ধারাবাহিক দরপতনের কারনে, শেয়ার বাজারকে স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে ও নতুন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়াতে অর্থ আইন, ২০২১ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর 19AAAA ধারার মাধ্যমে অর্থের উৎসের ব্যাখ্যা ব্যাতিরকে সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। এ ধারার প্রয়োগের ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ বলতে ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন’ কর্তৃক অনুমোদিত এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্টক, শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট, বন্ড, ডিবেঞ্চার ও অন্যান্য সিকিউরিটিজ এবং পুঁজিবাজারে ক্রয়-বিক্রয়যোগ্য সকল সরকারি সিকিউরিটিজ ও বন্ড বুঝাবে।
নতুন এই বিধান অনুযায়ী যেকোনো ব্যক্তি-করদাতা বিনিয়োগকৃত অংকের ২৫% হারে কর পরিশোধ করে পুঁজিবাজারে কোনো সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকৃত অর্থের উৎস নিয়ে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ অন্যকোনো কর্তৃপক্ষ কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকৃত অর্থের উপর ২৫% হিসাবে যে পরিমান কর পরিগনিত হবে সে পরিমাণ করের ৫% অতিরিক্ত কর জরিমানা হিসেবে পরিশোধ করতে হবে। অর্থাৎ বিনিয়োগকৃত অর্থের উপর ২৬.২৫% হারে কর পরিশোধ করতে হবে।
এই ধারায় শেয়ার বাজারে অর্থ সাদাকরনের সুবিধা সমূহঃ
১। ২৬.২৫% হারে কর পরিশোধ করার মাধ্যমে অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ।
২। বৈধ সম্পদ হিসাবে নতুন সম্পদ অর্জন।
এই ধারায় শেয়ার বাজারে অর্থ সাদা করার শর্তসমূহঃ
১। নূন্যতম ১ জুলাই, ২০২১ হতে ৩০ জুন, ২০২২ (উভয় দিন অন্তর্ভূক্ত, ১ বছর) সময়সীমার মধ্যে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ ও এই অর্থ তারল্য হিসাবে উত্তোলন করা যাবে না।
২। ২৬.২৫% হার যা প্রচলিত কর আরোপের হার থেকে অনেক বেশী।
৩। বিনিয়োগের অর্থ বি.ও. একাউন্টে জমাকৃত টাকা ‘সিকিউরিটিজে’ বিনিয়োগ করতে হবে নূন্যতম ৩৬৫দিন, অন্যথায় তা উত্তোলন বলে গণ্য হবে।
৪। দেশের শেয়ার বাজার স্থিতিশীল না হওয়ার কারনে এ খাতে বিনিয়োগের অনীহা।
কিন্তু অর্থ আইন, ২০২১ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর 19AAAAA ধারা অনুযায়ী শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ ব্যতিরকে নগদ অর্থ, অপ্রদর্শিত সম্পত্তি ইত্যাদির উপর এ ধারার টেবিল-১, টেবিল-২, টেবিল-৩ অনুযায়ী নির্দিষ্ট হারে কর পরিশোধের মাধ্যমে অপ্রদর্শিত সম্পদ দেখানের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
অর্থ আইন, ২০২১ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর 19AAAAA ধারার টেবিল-৩ অনুযায়ী নগদ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, অর্থিক স্কিম ও ইনস্ট্রুমেন্টস, সকল প্রকার ডিপোজিট বা সেভিং ডিপোজিট, সেভিং ইনস্ট্রুমেন্টস বা সার্টিফিকেট এর উপর ২৬.২৫% হারে কর পরিশোধের মাধ্যমে অপ্রদর্শিত সম্পদ দেখানো যায়। এক্ষেত্রে 19AAAA এর তুলনায় 19AAAAA ধারা উভয় ক্ষেত্রে অনেক সুবিধাজনক ও লাভজনক।
উপরে এই দুই ধারা পর্যালোচনা করে দেখা যায় 19AAAA এর তুলনায় 19AAAAA ধারা উভয় ক্ষেত্রে অনেক সুবিধাজনক ও লাভজনক। এতে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সরকারের কোন দৃঢ় পদক্ষেপ উল্লেখযোগ্য নয়। যদি এক্ষেত্রে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর আরোপ ২৬.২৫% এর পরিবর্তে ১৫% বা এর কম হারের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হত তাহলে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে বলে আমি মনে করি।
[মোঃ ফজলে রাব্বি সরদার, এফএমভিএ, এমএটি (ঢাবি); me@rabbedu.com]